প্রবাসী স্বজন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ১২ দফা দাবি অবশ্যই যৌক্তিক, তবে এসব দাবি পূরণে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছেন, এরই মধ্যে প্রবাসীদের অনেক দাবি পূরণও হয়েছে।
প্রবাসী স্বজন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে এসব কথা বলছিলেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিছবাহুর রহমান।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজার সদরের মামার বাড়ি রেস্তোরাঁয় আয়োজন করা হয় ওই আলোচনা সভা।
প্রবাসী স্বজন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর আয়োজনে ও প্রধান উপদেষ্টা মুরাদুল হক চৌধুরীর সর্বাত্বক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম ইসলাম শেফুল।
সাধারণ সম্পাদক এস এম মেহেদী হাসানের পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিছবাহুর রহমান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ফজলুর রহমান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, প্রবাসী স্বজন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের উপদেষ্টা আ হ জুবেদ প্রমুখ।
বক্তব্য রাখেন, সিলেট বিভাগ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদ কুয়েতের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবু সাইদ কুতুব উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা নুরে আলম জিকো, যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা এম এ কাইয়ূম তালুকদার,
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সারোয়ার আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন এর সভাপতি জাফর ইকবাল, মনুকূল কাগজ প্রতিদিন এর সম্পাদক মোস্তাক চৌধুরী, মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব এর সভাপতি মাহমুদুর রহমান, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমদসহ আরো অনেকে।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা আ হ জুবেদ,এসময় প্রবাসী এ সংগঠক প্রবাসীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ১২ দফা দাবি তুলে ধরেন যথাক্রমে,
১- প্রবাসে মারা যাওয়া সব বাংলাদেশি নাগরিকদের মরদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে আনতে হবে।
২- প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও প্রবাস থেকে ভোট প্রদানের সুযোগ।
৩- বিমানবন্দরে প্রবাসী হয়রানি বন্ধ।
৪- প্রবাসীদের পাসপোর্ট সংশোধনের সুযোগ।
৫- প্রবাসী নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন ।
৬- জাতীয় বাজেটে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ ।
৭- বিদেশে কাগজপত্রবিহীন প্রবাসীদের বৈধকরণে সরকারের সহযোগিতা।
৮- বিদেশে প্রবাসীদের জন্য পর্যাপ্ত বাংলাদেশি দূতাবাস ও শ্রমকল্যাণ উইং স্থাপন।
৯- প্রবাসীদের প্রবাসী পেনশন স্কিম এর আওতাভুক্ত করতে হবে, নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমা ছাড়া।
১০- সরকার কর্তৃক ঘোষিত ৫ শতাংশ প্রণোদনা বাস্তবায়ন।
১১- দক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠাতে হবে।
১২- অভিবাসন ব্যয় ১ লাখ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ও প্রবাস ফেরতদের কর্মসংস্থান, সুদমুক্ত পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা দেওয়া।
মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ফজলুর রহমান বলেন,তিনি প্রবাসী ও প্রবাসীদের স্বজনদের কল্যাণে বরাবরই কাজ করে যাচ্ছেন, যখনই কোনো প্রবাসী তার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন; তখনই সাধ্যমত কাজ করেছেন। ভবিষ্যতেও মৌলভীবাজার সদরের প্রবাসীরা কিংবা তাদের পরিবার গুলো যদি কোনো কারণে প্রয়োজন মনে করেন; তাহলে যেনো তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, বলেন পৌর মেয়র ফজলুর রহমান।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন,
প্রবাসীদের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকার আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে আরো ভালো কাজ করছেন।
আয়োজক সংগঠনের ১২ দফা দাবির বিষয়ে জ্যেষ্ঠ এ কর্মকর্তা বলেন, নিঃসন্দেহে এই দাবি গুলো যৌক্তিক। তবে সরকার এসব দাবির অনেক গুলো পূরণ করেছেন, বাকি দাবি গুলো নিশ্চয় ক্রমান্বয়ে পূরণ করা হবে।
তিনি বলেন, বিদেশে যাওয়ার আগে বাংলাদেশি নাগরিকরা যেনো অভিবাসন নিয়ম গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করেন। এতে যেকোনো দেশে বাংলাদেশি নাগরিকরা গিয়ে সমস্যাগ্রস্থ হলে; তাঁকে সহযোগিতা করে থাকে বাংলাদেশ সরকার।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী স্বজন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে নগদ অর্থ দেওয়া হয় ভুল চিকিৎসার শিকার কমলগঞ্জ উপজেলার ১০ বছর বয়সী এক অসহায় তরুণীকে।
পরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অকৃত্রিম বন্ধু, জনদরদি প্রবাসী নেতা হিসেবে পরিচিত, জালালাবাদ এসোসিয়েশন কুয়েতের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কমিউনিটি কুয়েতের আহ্বায়ক,প্রবাসী স্বজন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য মুরাদুল হক চৌধুরীকে প্রবাসীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিরলসভাবে কাজ করায় বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।